প্রায়োরিটি শব্দটি ইংরেজি শব্দ “Priority” থেকে এসেছে, যার অর্থ হলো প্রাধান্য বা অগ্রাধিকার। জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে কিছু কাজ বা বিষয়কে অন্যদের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া বা আগে সম্পন্ন করার প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে প্রায়োরিটি শব্দটি ব্যবহৃত হয়। আমরা প্রতিদিন আমাদের জীবনে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় প্রায়োরিটি নির্ধারণ করে থাকি। এটি আমাদের কাজের কার্যকারিতা এবং সাফল্যের মূল চাবিকাঠি।
প্রায়োরিটি-এর সংজ্ঞা
প্রায়োরিটি হলো এমন একটি প্রক্রিয়া বা ধারণা, যেখানে কোনো কিছু বা কাজকে অন্যান্য কাজের তুলনায় বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। সহজ ভাষায়, যেসব কাজ বা বিষয় বেশি গুরুত্বপূর্ণ, সেগুলোকে প্রথমে সম্পন্ন করার সিদ্ধান্তকেই প্রায়োরিটি বলা হয়।
প্রায়োরিটির গুরুত্ব
প্রায়োরিটি নির্ধারণ করা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে অত্যন্ত জরুরি। এটি আমাদের সময়, শক্তি, এবং সম্পদের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করে। বিশেষত কর্মজীবন, শিক্ষাজীবন এবং পারিবারিক জীবনে প্রায়োরিটি নির্ধারণ না করলে অগোছালো পরিস্থিতি তৈরি হয়।
- কর্মক্ষেত্রে প্রায়োরিটি: কর্মক্ষেত্রে সফল হতে হলে কাজের প্রায়োরিটি নির্ধারণ অত্যন্ত জরুরি। প্রতিটি কাজের গুরুত্ব এবং সময়সীমা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হয় কোন কাজটি আগে করা উচিত।
- ব্যক্তিগত জীবনে প্রায়োরিটি: পারিবারিক, সামাজিক, এবং ব্যক্তিগত জীবনে প্রায়োরিটি নির্ধারণ না করলে আমরা অনেক জরুরি বিষয় এড়িয়ে যেতে পারি, যা ভবিষ্যতে সমস্যা তৈরি করতে পারে।
উদাহরণ
১. একজন কর্মী তার অফিসের কাজের প্রায়োরিটি নির্ধারণ করে, যেখানে জরুরি এবং সময়সীমার ভিত্তিতে কাজগুলো ভাগ করা হয়। ২. একজন শিক্ষার্থী তার শিক্ষাজীবনে কোন বিষয়গুলো আগে পড়বে বা কোন পরীক্ষার জন্য বেশি সময় দেবে, তা নির্ধারণ করার মাধ্যমে প্রায়োরিটি সেট করে।
প্রায়োরিটির প্রকারভেদ
প্রায়োরিটি নির্ধারণ বিভিন্ন ধরণের হতে পারে। এর মধ্যে প্রধান তিনটি ধরণ হলো:
- জরুরি প্রায়োরিটি: যেসব কাজ সময়সীমার ভিত্তিতে অত্যন্ত জরুরি, সেগুলো আগে সম্পন্ন করা।
- গুরুত্বপূর্ণ প্রায়োরিটি: যেসব কাজ দীর্ঘমেয়াদে গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল নিয়ে আসে, সেগুলোকে আগে সম্পন্ন করা হয়।
- অনুপ্রয়োজনীয় প্রায়োরিটি: কিছু কাজ আছে যা ততটা জরুরি বা গুরুত্বপূর্ণ নয়, তবে সেগুলোও সময়ের প্রয়োজন অনুযায়ী করতে হয়।
প্রায়োরিটি নির্ধারণের কৌশল
সঠিকভাবে প্রায়োরিটি নির্ধারণ করতে কিছু কৌশল অনুসরণ করা যেতে পারে:
- উদ্দেশ্য নির্ধারণ: প্রতিটি কাজের উদ্দেশ্য এবং ফলাফল নির্ধারণ করে সেটার উপর ভিত্তি করে প্রায়োরিটি দিতে হবে।
- সময় ব্যবস্থাপনা: কোন কাজ কত সময়ের মধ্যে শেষ করতে হবে তা বিবেচনা করে প্রায়োরিটি নির্ধারণ করা।
- জরুরি বনাম গুরুত্বপূর্ণ: সব কাজ একসঙ্গে করা সম্ভব নয়, তাই কোন কাজ জরুরি এবং কোনটা গুরুত্বপূর্ণ, সেটা বিবেচনা করতে হবে।
উপসংহার
প্রায়োরিটি নির্ধারণ হলো জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা, যা আমাদের সময় এবং শক্তি সঠিকভাবে কাজে লাগাতে সহায়তা করে। ব্যক্তি ও পেশাগত জীবনে সফলতা অর্জনের জন্য সঠিক প্রায়োরিটি নির্ধারণ করা অপরিহার্য।