Attitude মানে কি?-Attitude দেখানো বলতে কি বোঝায়?

Attitude শব্দটি আমরা প্রায়ই ব্যবহার করি এবং আমাদের চারপাশে এটি শুনতে পাই। কেউ ভালো আচরণ করলে আমরা বলি তার attitude ভালো, আবার কেউ খারাপ আচরণ করলে বলি তার attitude খারাপ। তবে আসলে Attitude মানে কি? এবং Attitude দেখানো বলতে কী বোঝানো হয়? আজকের এই আর্টিকেলে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব।

Attitude এর সংজ্ঞা

Attitude বলতে মূলত কোনো ব্যক্তি বা বিষয়ের প্রতি কারো মানসিক অবস্থা বা আচরণের ধরণকে বোঝায়। এটি হতে পারে ইতিবাচক, নেতিবাচক বা নিরপেক্ষ। একজন মানুষের Attitude তার চিন্তাভাবনা, আবেগ এবং আচরণের মাধ্যমে প্রকাশ পায়।

বাংলায় Attitude-এর অর্থ দাঁড়ায় “মনোভাব” বা “মানসিকতা”। কারো প্রতি আপনার ধরণ, আচরণ বা আপনি তাকে কিভাবে গ্রহণ করছেন, সেটিই আপনার attitude নির্দেশ করে।

Attitude এর প্রকারভেদ

Attitude সাধারণত তিন ধরনের হতে পারে:

১. ইতিবাচক Attitude (Positive Attitude):

যারা ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করে, তারা যেকোনো পরিস্থিতিতে ভালো কিছু খুঁজে বের করতে চেষ্টা করে। তাদের মনোভাব উদার এবং সহানুভূতিশীল হয়। ইতিবাচক attitude আমাদের জীবনকে সহজ করে তোলে এবং সম্পর্কগুলো সুন্দর হয়। উদাহরণস্বরূপ, একটি কঠিন কাজকে কেউ চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেয়, এবং সেই কাজের মধ্য থেকে শেখার চেষ্টা করে—এটিই তার ইতিবাচক মনোভাব।

২. নেতিবাচক Attitude (Negative Attitude):

যারা নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করে, তারা প্রতিটি পরিস্থিতিতে সমস্যা খুঁজে বের করার চেষ্টা করে এবং সবকিছুতে বিরক্তি প্রকাশ করে। নেতিবাচক মনোভাব জীবনের প্রতি অনাগ্রহ সৃষ্টি করে এবং সম্পর্কগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, কেউ কোনো কাজ করতে গেলে সবসময়ই মনে করে যে সে ব্যর্থ হবে বা কাজটি তার দ্বারা হবে না—এটি তার নেতিবাচক মনোভাব।

৩. নিরপেক্ষ Attitude (Neutral Attitude):

কিছু মানুষ নিরপেক্ষ মনোভাব পোষণ করে, যারা কোনো বিষয়ের প্রতি কোনো বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে না। তারা সাধারণত পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে তাদের মনোভাব পরিবর্তন করে।

Attitude দেখানো বলতে কি বোঝায়?

Attitude দেখানো বলতে বোঝায়, কারো আচরণ বা মনোভাবকে স্পষ্টভাবে প্রকাশ করা। এটি ভালো বা খারাপ উভয়ভাবেই হতে পারে।

উদাহরণ:

  • ইতিবাচক Attitude দেখানো:
    কাউকে সহযোগিতা করা, হাসিমুখে কথা বলা, সবার সাথে ভালো আচরণ করা। উদাহরণস্বরূপ, রিমি সবসময় অন্যদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসে এবং কোনো চাপ থাকলেও হাসিমুখে থাকে। এটি তার ইতিবাচক attitude দেখানো।
  • নেতিবাচক Attitude দেখানো:
    অন্যদের প্রতি বিরক্তি বা অপমানজনক আচরণ করা, সবসময় অভিযোগ করা। যেমন, রফিক যখন কোনো কাজ পায়, তখন সে কোনো সহযোগিতা ছাড়াই খারাপ মনোভাব নিয়ে কাজ করে। এটি তার নেতিবাচক attitude দেখানো।

Attitude কেন গুরুত্বপূর্ণ?

Attitude আমাদের জীবনযাত্রার একটি বড় অংশ। এটি আমাদের সম্পর্ক, কাজের দক্ষতা এবং ব্যক্তিত্বে প্রভাব ফেলে।

কিছু কারণে attitude গুরুত্বপূর্ণ:

  • সম্পর্কের উন্নতি:
    ইতিবাচক attitude মানুষের সাথে ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলতে সাহায্য করে। অন্যদিকে নেতিবাচক attitude সম্পর্কের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি করতে পারে।
  • ক্যারিয়ারের উন্নতি:
    কর্মক্ষেত্রে আপনার attitude আপনার স্কিল-এর পাশাপাশি আপনার সফলতায় বড় ভূমিকা রাখে। ইতিবাচক মনোভাব আপনাকে ভালো কাজে আগ্রহী করে তোলে এবং আপনার প্রোফেশনাল রিলেশনশিপও মজবুত হয়।
  • ব্যক্তিগত উন্নয়ন:
    ভালো attitude আপনার ব্যক্তিগত জীবনের উন্নতি ঘটায়। আপনি যেকোনো সমস্যাকে সহজভাবে নিতে পারেন এবং জীবনের প্রতি আপনার ধ্যান ধারণাও ইতিবাচক হয়।

Attitude এর উদাহরণ

১. ইতিবাচক উদাহরণ

রাহাত একজন কর্মী, যিনি সবসময় কাজের প্রতি আগ্রহী এবং নিজের কাজকে ভালোবাসেন। তিনি প্রতিটি কাজেই মনোযোগ দেন এবং কোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে তা সমাধান করতে চেষ্টা করেন। তার সহকর্মীরা তার attitude-এর প্রশংসা করে, কারণ তিনি সবসময় হাসিখুশি থাকেন এবং অন্যদেরও সাহায্য করেন।

২. নেতিবাচক উদাহরণ

রাকিব একজন কর্মী, যিনি প্রতিটি কাজেই অসন্তুষ্ট। তিনি কোনো কাজ করতে গেলে সবসময় অভিযোগ করেন এবং নতুন কোনো চ্যালেঞ্জকে গ্রহণ করতে চান না। তার attitude-এর কারণে সহকর্মীরা তার সাথে কাজ করতে অস্বস্তি বোধ করেন এবং এটি তার ক্যারিয়ারে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

কিভাবে ইতিবাচক Attitude গড়ে তুলবেন?

আপনার attitude কেমন হবে, তা আপনি নিজেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। কিছু ধাপে আপনি আপনার attitude-কে উন্নত করতে পারেন:

  • অপ্টিমিস্টিক হোন:
    সব পরিস্থিতিতে ভালো দিক খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন। নেতিবাচক চিন্তা বাদ দিয়ে ইতিবাচক চিন্তা করার অভ্যাস করুন।
  • সফল মানুষদের সাথে মিশুন:
    যারা ইতিবাচক attitude পোষণ করে, তাদের সাথে মিশলে আপনার attitude-ও উন্নত হবে। আশেপাশের পরিবেশ আমাদের উপর প্রভাব ফেলে, তাই সবসময় ইতিবাচক মানুষদের সাথে থাকার চেষ্টা করুন।
  • নিজের স্কিল উন্নত করুন:
    নিজের কাজের দক্ষতা বাড়ান এবং নতুন কিছু শিখুন। যখন আপনি নিজের স্কিল নিয়ে আত্মবিশ্বাসী হন, তখন আপনার attitude স্বাভাবিকভাবেই ইতিবাচক হয়ে ওঠে।

উপসংহার

Attitude একটি গুরুত্বপূর্ণ মানসিকতা যা আমাদের ব্যক্তিত্ব ও আচরণে প্রতিফলিত হয়। একজন মানুষের attitude তার জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে। সঠিক ও ইতিবাচক attitude আমাদের সম্পর্ক, ক্যারিয়ার এবং ব্যক্তিগত জীবনকে সুন্দর ও সমৃদ্ধ করতে পারে। নেতিবাচক attitude আমাদের জীবনে বাধা সৃষ্টি করতে পারে, তাই আমাদের সর্বদা মনোযোগ দিয়ে নিজের attitude উন্নত করার চেষ্টা করা উচিত।

তাই, প্রতিদিনের জীবনে ইতিবাচক attitude বজায় রাখুন এবং এর মাধ্যমে আপনার জীবনকে আরও সুন্দর করে তুলুন।

Author

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *