আমরা প্রায়ই পরলোকগমন শব্দটি শুনে থাকি। এটি এমন একটি শব্দ যা মানুষের মৃত্যুকে বোঝাতে ব্যবহার করা হয়। সহজভাবে বলতে গেলে, পরলোকগমন মানে হলো “এই পৃথিবী থেকে চলে যাওয়া” বা মৃত্যুর পর অন্য জগতে যাত্রা করা।
এই শব্দটি সাধারণত ধর্মীয় এবং আধ্যাত্মিক অর্থে ব্যবহৃত হয়। এটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে পৃথিবীর জীবন চিরকাল নয়। মানুষ জীবনের শেষ পর্যায়ে পৌঁছে, অন্য জগতে চলে যায়, যাকে আমরা পরলোকগমন বলি।
পরলোকগমনের সাধারণ অর্থ
পরলোকগমন মানে হলো মৃত্যুর পর অন্য জগতে পাড়ি দেওয়া। এই জগৎ আমাদের পরিচিত পৃথিবী নয়, এটি এমন এক স্থান বা অবস্থা, যা সম্পর্কে আমরা সঠিকভাবে কিছু জানি না। তবে অনেক ধর্ম এবং আধ্যাত্মিক বিশ্বাসে বলা হয়, পরলোকগমনের পর মানুষের আত্মা এক বিশেষ স্থানে যায়, যেখানে সে শান্তি বা ন্যায় বিচার পায়।
পরলোকগমনের সাধারণত ব্যবহৃত অর্থ ও উদাহরণ
পরলোকগমন কথাটি অনেক সময় বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা হয়। নীচে কিছু সাধারণ উদাহরণ দেওয়া হলো:
- ধর্মীয় ভাষায়: “তার পরলোকগমন হয়েছে, এখন সে শান্তিতে আছে।”
- সাধারণ কথায়: “তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন” – এই ধরনের বাক্যে মানুষ পরলোকগমনের অর্থে ব্যবহার করে।
ধর্মীয় ব্যাখ্যা
প্রায় সব ধর্মেই পরলোকগমনের একটি বিশেষ স্থান বা পর্যায়ের ধারণা রয়েছে। যেমন:
- ইসলাম ধর্ম: ইসলাম ধর্মে বিশ্বাস করা হয়, মৃত্যুর পর মানুষ কবরের জীবন বা বারজাখে যায়, যেখানে তার পাপ-পুণ্যের বিচার হয়।
- হিন্দু ধর্ম: হিন্দু ধর্মে বিশ্বাস করা হয়, মৃত্যুর পর আত্মা পুনর্জন্ম গ্রহণ করে অথবা মোক্ষ প্রাপ্তির জন্য নির্দিষ্ট স্তরে যায়।
- খ্রিস্টধর্ম: খ্রিস্টধর্মে বিশ্বাস করা হয়, মৃত্যুর পর মানুষের আত্মা স্বর্গ বা নরকে যায়, যেখানে তার কাজের বিচার করা হয়।
পরলোকগমনের প্রতি মানুষের মনোভাব
পরলোকগমন সম্পর্কে মানুষের বিভিন্ন ধরনের মনোভাব রয়েছে। কেউ কেউ পরলোকগমনকে ভয় পান, কারণ এটি জীবনের শেষ পর্যায়। আবার কেউ কেউ একে শান্তির যাত্রা মনে করেন। অনেকেই বিশ্বাস করেন যে, মৃত্যুর পরের জীবন তার কাজের ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়।
পরলোকগমনের গুরুত্ব
পরলোকগমনের ধারণা আমাদের জীবন সম্পর্কে সচেতন হতে সাহায্য করে। এটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, একদিন আমাদের এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হবে। তাই সঠিক পথে চলা, ভালো কাজ করা এবং অন্যদের সাহায্য করা গুরুত্বপূর্ণ।
পরলোকগমনের মাধ্যমে শিক্ষা
পরলোকগমন আমাদের জীবনে কিছু শিক্ষণীয় দিক নির্দেশ করে:
- ভালো কাজের গুরুত্ব: জীবনে সৎ পথে চলা এবং ভালো কাজ করা।
- সম্পর্কের মূল্য: মানুষের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক তৈরি করা।
- শান্তির সন্ধান: জীবনের প্রতি মুহূর্ত উপভোগ করা এবং শান্তির জন্য চেষ্টা করা।
উদাহরণ
নীচে কয়েকটি সহজ উদাহরণ দেওয়া হলো যা পরলোকগমনের প্রভাব বুঝতে সহায়ক হবে:
- সমাজের প্রভাব: কারো পরলোকগমন হলে তার পরিবার, সমাজে একটি শূন্যতা তৈরি হয়।
- আধ্যাত্মিক মনোভাব: অনেকেই পরলোকগমনকে জীবনের একটি অধ্যায় মনে করেন এবং এতে তারা শান্তি খোঁজার চেষ্টা করেন।
FAQ (প্রশ্নোত্তর)
প্রশ্ন: পরলোকগমন মানে কি?
উত্তর: পরলোকগমন মানে হলো মৃত্যুর পর অন্য জগতে পাড়ি দেওয়া।
প্রশ্ন: পরলোকগমন কীভাবে ঘটবে?
উত্তর: এটি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, যা মৃত্যু পরবর্তী জীবনের ধারণা নিয়ে আসে।
প্রশ্ন: পরলোকগমনের উদ্দেশ্য কি?
উত্তর: এটি আধ্যাত্মিক ও ধর্মীয় বিশ্বাসে বলা হয়েছে, জীবনের চূড়ান্ত গন্তব্য।
উপসংহার
পরলোকগমন একটি স্বাভাবিক এবং অপরিহার্য অংশ, যা আমাদের জীবনের সত্যকে স্মরণ করিয়ে দেয়। জীবনের শেষ এই পর্যায়কে ভীতিকর না ভেবে এটিকে মেনে নেওয়া উচিত এবং সঠিক পথে চলা উচিত।